Search This Blog

Sunday, 13 August 2017

রোদ বৃষ্টি






-ওয়েদার কিরকম গো ? 😎

-বৃষ্টি আর বৃষ্টি, একদম ভালো লাগেনা 😔

-এখানে জানো, আজ ঝলমলে রোদ 😇

-সেতো বুঝতেই পারছি, নাহলে এত খুশি ? 😏

-খুশি হবোনা! কত্তদিন পরে রোদ্দুর কে দেখতে পেয়েছি! 😍

-আমার বৃষ্টি একদম ভালো লাগেনা, জানো তুমি 😖

-আমাকে ভালো লাগেনা? 😜

-উফ, বৃষ্টি, আমি কি তোমার কথা বললাম?

-কি করছো গো?

-তোমার সাথে কথা বলছি

-আর?

-আর কি করবো!

-গান শুনছো

-তুমি কিকরে জানলে?

-মনে হলো

-তুমি কি করছো?

-তোমাকে দেখছি 😌

-ঘুম নেই? কত রাত এখন?

-বলতঃ?

-১টা ৩৪ 

-আমার টাইম মুখস্থ, তাইনা? 😊

-হুম, এখানে কত বলতঃ?

-তোমার ১২ টা  

-হুম, তোমার রাত, আমার দিন

-আমার দিন

-কি করে?

-তুমি আছ, তাই 😌

-ডিনার হয়েছে? 

-না, আজ ডিনার হবেনা 😜

-কেন? 😡

-তোমাকে দেখছি বললাম না

-বৃষ্টি, এই ভর দুপুরে ইয়ার্কি ভালো লাগছেনা, ডিনার করোনি কেন?

-কারণ আছে

-কি কারণ?

-বলবো না

-যাও আমিও লাঞ্চ করবোনা তাহলে কতদিন বলেছি, ল্যাব যত ব্যস্তই থাকো, ফিরে ডিনার টা ঠিকঠাক করবে তুমি কোনোদিন আমার কথা শোনোনা

-এই, কি লাঞ্চ গো আজকে? জেম্মা কি করেছে? খিচুড়ি?

-আবার কথা ঘোরালে!

-বলো না বাবা!

-তোমার আদরের জেম্মা আমাকে একলা রেখে তার দিদির বাড়ি গেছে! 😡 😡 কীর্তন আছে 😡  রথযাত্রা উপলক্ষে !

-এবাবা, খুব ভালো হয়েছে 😝 😝

-তা তো হবেই, এখন এই বৃষ্টির মধ্যে, যেখানে অফিস যেতে পারিনি, সেখানে লাঞ্চ খেতে বেরোতেই হবে

সকাল থেকেও চা ছাড়া কিছু পেটে পড়েনি

-চলো একসাথে খেতে যাই 😇

-হুম, ওটাই বাকি আছে, "হ্যাংআউট" টা বন্ধ করো আর উড়ে চলে এস এখানে 😡

-যদি আসি? 😍 😍

-একদম ভালো লাগছেনা বৃষ্টি, এমনিতেই তোমাকে দেখিনা কতদিন

-আসবোনা তাহলে তো? 😎

-জানিনা যাও 😔

-আমাকে ডাকলে কিন্তু আমি চলেই আসবো তোমার কাছে

-ডাকছি তো, আসছো কই? ২বার ভিডিও কল ক্যানসেল করলে ! 😡

-ডাকোই নি 😊

-ডাকি নি? 🙁

-ব্যালকনিতে এসে আকাশের দিকে তাকিয়ে ডাকো আমাকে

-বুঝলাম, তোমাকে দেখি তা চাইছোনা

-চাইছি তো !

-ক্যাম আসছোনা কেন তবে ?

-বাইরে এসে ডাকো, নাহলে কিন্তু আমি চলে যাবো

বৃষ্টিকে চেনে সৌরদীপ অনেক দিন জানে, ওর বৃষ্টি কিছুতেই আজ ওয়েব ক্যাম এর ওপারে আসবেনা, হয়তো কিছুক্ষন পরে ওর একটানা মেসেজ এর আর কোনো উত্তর দেবেনা, কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়বে সারাদিন প্রফেসর উইনকের্স এর ল্যাব বৃষ্টিকে কি পরিশ্রম করতে হয় তা সৌরদীপ জানে
এমনি ওর বৃষ্টি পাগলী কখনো রাত ২টোর সময় হ্যাংআউট পিং করে উঠবে, বৃষ্টি বলে উঠবে, "জানো, আজ খুব পায়ে ব্যাথা করছে, একটু পা টিপে দেবে?" সৌরদীপ জানে সাত সমুদ্র পেরিয়ে তার বৃষ্টির কাছে পৌঁছনো সম্ভব নয়, তবুও বলে, "কোথায় ব্যাথা, শোও তো, আমি টিপে দিচ্ছি" ঐটুকু কথাই স্ক্রিন এর পর্দা দিয়ে পৌঁছে যাবে অনেক দূরে, শান্তি পাবে বৃষ্টি, ঘুমিয়ে পড়বে, হয়তো
এইসব ভাবতে ভাবতে একটা সিগারেট ধরিয়ে জানলার দিকে আসে সৌরদীপ, হাতের পোড়া দেশলাই কাঠিটা ফেলতে ভাবে, ব্লুমিংটন ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস , বৃষ্টির বন্ধ কাঁচের জানলার ওপারে একটু পরেই ভোর হবে  
কাঠিটা ফেলতে গিয়ে চোখ আটকে যায় বিরাটির এই বিরাট হাউসিং কমপ্লেক্স ওদের ঠিক বিপরীতের 'মেঘছায়া' এপার্টমেন্টের তলায় বৃষ্টিদের ফ্ল্যাটের ব্যালকনি তে কে দাঁড়িয়ে, হাতে i-Pad নিয়ে ! ল্যাপটপের মেসেজ বক্স এর পিং আওয়াজ এলো, দৌড়ে এসে সৌরদীপ দেখে বৃষ্টি লিখেছে, "আমাকে ডাকতে বললাম না?"
বুকের মধ্যে হাজারটা হাতুড়ি দমাদ্দম শব্দ করতে থাকে সৌরদীপের ! "তুমি এসেছো বৃষ্টি, কালও তো বিকেল বেলা মেসেজ করলে যে, স্নান করেছো একটু আগে, তার মানে তখন তুমি দুবাই এয়ারপোর্ট ! surprise দেবে বলে একটিবার বলোনি যে তুমি আসছো! আমি এয়ারপোর্ট যেতে পারতাম না তোমার বাবার সাথে !!" হাজারটা কথা মাথায় আসে সৌরদীপ এর কিন্তু কিছু লিখতে পারেনা, শুধু লেখে,
-বৃষ্টি ইইইইইই ইইইইই..
লিখেই আবার ছিটকে চলে আসে ব্যালকনি তে, বৃষ্টিদের ব্যালকনি ফাঁকা, কেউ নেই তো ! তবে কি অর মনের ভুল? সারাদিন বৃষ্টিকে ভেবে ভেবে সৌরদীপ কি  সারাদিন শুধুমাত্র বৃষ্টিকেই দেখে, এমনকি কল্পনাতেও? মনটা ভারী হয়ে ওঠে।
হঠাৎ চোখ যায় 'মেঘছায়া' গ্রাউন্ড ফ্লোর নীল জিন্স আর হালকা হলুদ টপ, খোলা চুলগুলোকে  বাতাসে ভাসিয়ে এপার্টমেন্ট এর এন্ট্রান্স থেকে ছিটকে বেরোয় বৃষ্টি উড়ে আসতে থাকে সৌরদীপদের 'আকাশনীল' এপার্টমেন্ট এর দিকে
ওর রোদ্দুরের সাথে মিশে যেতে

 ***************



No comments:

Post a Comment

প্রতীক্ষা

শীতটা বোধ হয় এবার তাড়াতাড়িই পড়বে। সবে তো মাত্র ডিসেম্বর মাসের ক ’ টা দিন হয়েছে, পশ্চিমের সূর্যের তেজ যেন বিকেল হবার আগেই কেমন ম্লান ...