এটাও বাস্তব
বন্ধ
দরজাটা খুলতেই কোনোক্রমে ডজ করে, ড্রিবল করে নিজেদের সিট্ টাকে কন্ফার্ম
করার জন্য অপেক্ষমান জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ার পরে ধীরে সুস্থে কম্পার্টমেন্টে
উঠে লেডিস ও জেন্টস সিটের মাঝএর জায়গায় দাঁড়ায় শুভম l অপেক্ষা করে
মেট্রোর দরজা বন্ধ হবার জন্য l দরজা বন্ধ হলেই বন্ধ দরজার দিকে পিঠ করে
দাঁড়াবে সে l
অভ্যাসবশতঃ
এটাই ওর নিয়ম, কটা স্টেশনতো মাত্র যাবে, তার জন্য ইঁদুর দৌড় এর একদম
পক্ষপাতী নয় সেl এমনিতেই তো জীবনের পথে ইঁদুর দৌড় দৌড়াতে দৌড়াতে সবাই
ক্লান্ত হয়ে উঠেছে, এই সামান্য কতোক্ষণ বসে যাবার জন্যেও ছুট! ধুর, ভালো
লাগে নাকি এসব!
দরজা
টাও আজ বন্ধ করতে দেরি করছে, অফিস টাইম ঠিক নয় এটা, তবু দমদম স্টেশন এ
যেকোনো সময়েই যদি ট্রেন ছাড়তে একটু দেরি হয় তখন ভিড় বাড়তে বাড়তে
পরিস্থিতি কেমন অসহনীয় হয়ে ওঠেl আজও তেমনি l একজন একজন করে, কখনো বা একদল
যাত্রী sustained release ট্যাবলেটের নিয়মে কামরায় উঠছে আর শুভম একটু
একটু করে দরজার সাইডের দিকে সরে যাচ্ছেl দরজা বন্ধ হবার বেল পড়তেই দরজার
দিকে ঘুরে দাঁড়াবার প্রস্তুতি নিল শুভমl ঠিক তখনি খেয়াল করলো যে দমদম রেল
স্টেশন এর দিকের এস্কালেটর থেকে প্লাটফর্ম এ পা দিয়েই ট্রেন ধরার জন্য
দৌড়ে আসছে লাল পাড় সাদা তাঁতের শাড়ী l চোখ সরাতে পারেনা শুভমl চোখ সরাতে
না পারার মতোই সেই নারীl মনে মনে কামনা করে, ইস, সাদা শাড়ী যেন ট্রেন না
মিস করেl
লাল
পাড় সাদা তাঁতের শাড়ী কে সামনে যেতে দিয়ে দরজার দিকে পিঠ করতেই ঘড়ঘড়
করে দরজা বন্ধ হয়ে ট্রেন চলতে শুরু করলো পাতালের দিকেl মিষ্টি একটা গন্ধ
নাকে এসে লাগে শুভমের l কোনো স্কুলের মিস্ট্রেস কি? হয়তো স্কুলের কোনো
অনুষ্ঠান আছে, তাই এরকম সাজগোজ l নাহলে এই কাজের দিনে চুলে কেউ গোলাপ
লাগিয়ে রাস্তায় বেরোয়না l নিজের কল্পনায় ওই সাদা শাড়ী পরিহিতা কে কোনও
স্কুলের টিচার ভাবতেই ভালো লাগছে ওরl কোনও অনুষ্ঠান যে এটেন্ড করতে যাচ্ছে
এটা নিশ্চিত l গড়পড়তা বাঙালির থেকে একটু লম্বা, চুলটা ঘন রেশমের মতো,
পিঠ ছাড়িয়ে ধাপে ধাপে কোমরের দিকে নেমে এসেছে l যাক, আজকে বিজনেস
ক্লায়েন্ট মিট করার আগে মুডটা একটু ফুরফুরে হয়ে যাবে সাদা শাড়ীর
কল্যাণেl সুন্দর নারীকে নিষ্পাপ দেখে মুগ্ধ না হবার মতন উদাসী শুভম নয়, মন
ভালো হয়ে ওঠে ওর l
বেশ
লম্বা শুভম ওl ট্রেনের ভিড়ে মাঝে মাঝেই সাদা শাড়ীর সাথে স্পর্শ হয়ে
যাচ্ছে ওর, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নারীর রেশমি চুলের গোছ থেকে দু একটা চুল
যখন শুভমের মুখে হালকা ছুঁয়ে ওকে ভালোলাগায় ভরিয়ে দিচ্ছে তখন ই খেয়াল
করলো ব্যাপারটা l
এ
বাবা, তাড়াহুড়ো করে বেরিয়েছে নাকি? এতো সুন্দর সেজেছে, অথচ এটা খেয়াল
করেনি! বাড়ির কারো চোখে পড়লো না! না কি লোকাল ট্রেনের ভিড়ের চাপে এমন
হলো? কারণ যাই হোক, খুব খারাপ লাগছে শুভমেরl হয়তো স্কুলে যখন পৌঁছবে,
কলিগদের কারো চোখে পড়বে, ওকে বলে দিতে পারবে, কিন্তু তার আগে তো কয়েকশো
মানুষের চোখের সামনে দিয়ে যেতে হবে সাদা শাড়ীকে! কতজন দেখবে এই সাজের
দৃষ্টিকটু খুঁত! খুব মন খারাপ লাগে শুভমেরl কোনো সহৃদয় মহিলার চোখে পড়লে
হয়তো বলে দেবেন তিনি সাদা শাড়ী পরিহিতাকে, কিন্তু যদি তা না হয়!
সামনে
তখন আর ভীড় নেই শুভমের, নেই জগৎ সংসারের কেউ, আমিই তোমার সব, আমি ই তোমার
কৃষ্ণ, ভাবখানা এই! কিন্তু বলবে কি করে? একজন মহিলা কে এই কথা বলা যায়?
বলা যায় যে আপনার ব্লাউসের হাতের পিছনদিকের সেলাইটা অনেকখানি ফেসে গেছে !
তাও সম্পূর্ণ অপরিচিত এক পুরুষ হয়ে! কিভাবে react করবে ওই সাদা শাড়ী?
অপ্রস্তুত তো হবেই, লজ্জায় কি কুঁকড়ে যাবে? নীরবে কৃতজ্ঞতা জানাবে
শুভমকে? নাকি ভীষণ রেগে যাবে, সিন create করবে জনসমক্ষে! ভেবে পায়না
confused হয়ে যাওয়া শুভমl কিন্তু যদি কৃতজ্ঞ হয়? একটা প্রেম এর সুরুয়াত
ও তো হতে পারে! আবার যদি তা না হয়? এক ট্রেন ভর্তি লোক শুভমকে কৌতুকের
দৃষ্টি তে দেখবে! কিন্তু ও কি এটা বুঝবে না, কোনো বাজে উদ্দেশ্য ওর নেই,
জাস্ট ওকে ভিড়ের মাঝে অনেকগুলো কুদৃষ্টি থেকে এলার্ট করতে এইটুকু করছে
অপরিচিত এই যুবক l এতক্ষন ওর পিছনে শুধু শুভম, কিন্তু আর একটু এগোলেই যে
সবার দৃষ্টি পড়বে ওই দিকেl সাতপাঁচ ভেবে চলে সে, বেলগাছিয়া পেরোতেই
ট্রেনের ভীড় বাড়তে থাকে l
ধুর,
যা হয় হোক, "একটা কথা বলবো ম্যাডাম, প্লিজ খারাপ ভাববেন না আমায়, আঁচল
টা একটু গায়ে জড়িয়ে নিন কাইন্ডলি আর ট্রেন থেকে নেমে ওয়াশরুম এ গিয়ে
ড্রেসটা একবার চেক করে নেবেনl জানি অনধিকার চর্চা করছি, প্লিজ ক্ষমা করবেন l
"
উফফ রিলিভড, বলতে পেরেছে তাহলে! কিন্তু রিঅ্যাকশন হলোনা তো কোনও!
লাল পাড় সাদা শাড়ী কোথায়?! ওর এতো শত ভাবনার মাঝে কি নেমে গেলো? না কি এগিয়ে গেলো লেডিস সিটের দিকে! খেয়ালই করলোনা সে?!
"পরবর্তী স্টেশন পার্ক স্ট্রিট, প্লাটফর্ম বাঁ দিকে.... আগলা স্টেশন....."
গন্তব্যের ঘোষণায় সম্বিৎ ফেরে l
নামার জন্য দরজার দিকে ঘুরে দাঁড়ায় শুভমl
বন্ধ
দরজাটা খুলতেই কোনোক্রমে ডজ করে, ড্রিবল করে নিজেদের সিট্ টাকে কন্ফার্ম
করার জন্য অপেক্ষমান জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ার পরে ধীরে সুস্থে কম্পার্টমেন্টে
উঠে লেডিস ও জেন্টস সিটের মাঝএর জায়গায় দাঁড়ায় শুভম l অপেক্ষা করে
মেট্রোর দরজা বন্ধ হবার জন্য l দরজা বন্ধ হলেই বন্ধ দরজার দিকে পিঠ করে
দাঁড়াবে সে l
অভ্যাসবশতঃ
এটাই ওর নিয়ম, কটা স্টেশনতো মাত্র যাবে, তার জন্য ইঁদুর দৌড় এর একদম
পক্ষপাতী নয় সেl এমনিতেই তো জীবনের পথে ইঁদুর দৌড় দৌড়াতে দৌড়াতে সবাই
ক্লান্ত হয়ে উঠেছে, এই সামান্য কতোক্ষণ বসে যাবার জন্যেও ছুট! ধুর, ভালো
লাগে নাকি এসব!
দরজা
টাও আজ বন্ধ করতে দেরি করছে, অফিস টাইম ঠিক নয় এটা, তবু দমদম স্টেশন এ
যেকোনো সময়েই যদি ট্রেন ছাড়তে একটু দেরি হয় তখন ভিড় বাড়তে বাড়তে
পরিস্থিতি কেমন অসহনীয় হয়ে ওঠেl আজও তেমনি l একজন একজন করে, কখনো বা একদল
যাত্রী sustained release ট্যাবলেটের নিয়মে কামরায় উঠছে আর শুভম একটু
একটু করে দরজার সাইডের দিকে সরে যাচ্ছেl দরজা বন্ধ হবার বেল পড়তেই দরজার
দিকে ঘুরে দাঁড়াবার প্রস্তুতি নিল শুভমl ঠিক তখনি খেয়াল করলো যে দমদম রেল
স্টেশন এর দিকের এস্কালেটর থেকে প্লাটফর্ম এ পা দিয়েই ট্রেন ধরার জন্য
দৌড়ে আসছে লাল পাড় সাদা তাঁতের শাড়ী l চোখ সরাতে পারেনা শুভমl চোখ সরাতে
না পারার মতোই সেই নারীl মনে মনে কামনা করে, ইস, সাদা শাড়ী যেন ট্রেন না
মিস করেl
লাল
পাড় সাদা তাঁতের শাড়ী কে সামনে যেতে দিয়ে দরজার দিকে পিঠ করতেই ঘড়ঘড়
করে দরজা বন্ধ হয়ে ট্রেন চলতে শুরু করলো পাতালের দিকেl মিষ্টি একটা গন্ধ
নাকে এসে লাগে শুভমের l কোনো স্কুলের মিস্ট্রেস কি? হয়তো স্কুলের কোনো
অনুষ্ঠান আছে, তাই এরকম সাজগোজ l নাহলে এই কাজের দিনে চুলে কেউ গোলাপ
লাগিয়ে রাস্তায় বেরোয়না l নিজের কল্পনায় ওই সাদা শাড়ী পরিহিতা কে কোনও
স্কুলের টিচার ভাবতেই ভালো লাগছে ওরl কোনও অনুষ্ঠান যে এটেন্ড করতে যাচ্ছে
এটা নিশ্চিত l গড়পড়তা বাঙালির থেকে একটু লম্বা, চুলটা ঘন রেশমের মতো,
পিঠ ছাড়িয়ে ধাপে ধাপে কোমরের দিকে নেমে এসেছে l যাক, আজকে বিজনেস
ক্লায়েন্ট মিট করার আগে মুডটা একটু ফুরফুরে হয়ে যাবে সাদা শাড়ীর
কল্যাণেl সুন্দর নারীকে নিষ্পাপ দেখে মুগ্ধ না হবার মতন উদাসী শুভম নয়, মন
ভালো হয়ে ওঠে ওর l
বেশ
লম্বা শুভম ওl ট্রেনের ভিড়ে মাঝে মাঝেই সাদা শাড়ীর সাথে স্পর্শ হয়ে
যাচ্ছে ওর, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নারীর রেশমি চুলের গোছ থেকে দু একটা চুল
যখন শুভমের মুখে হালকা ছুঁয়ে ওকে ভালোলাগায় ভরিয়ে দিচ্ছে তখন ই খেয়াল
করলো ব্যাপারটা l
এ
বাবা, তাড়াহুড়ো করে বেরিয়েছে নাকি? এতো সুন্দর সেজেছে, অথচ এটা খেয়াল
করেনি! বাড়ির কারো চোখে পড়লো না! না কি লোকাল ট্রেনের ভিড়ের চাপে এমন
হলো? কারণ যাই হোক, খুব খারাপ লাগছে শুভমেরl হয়তো স্কুলে যখন পৌঁছবে,
কলিগদের কারো চোখে পড়বে, ওকে বলে দিতে পারবে, কিন্তু তার আগে তো কয়েকশো
মানুষের চোখের সামনে দিয়ে যেতে হবে সাদা শাড়ীকে! কতজন দেখবে এই সাজের
দৃষ্টিকটু খুঁত! খুব মন খারাপ লাগে শুভমেরl কোনো সহৃদয় মহিলার চোখে পড়লে
হয়তো বলে দেবেন তিনি সাদা শাড়ী পরিহিতাকে, কিন্তু যদি তা না হয়!
সামনে
তখন আর ভীড় নেই শুভমের, নেই জগৎ সংসারের কেউ, আমিই তোমার সব, আমি ই তোমার
কৃষ্ণ, ভাবখানা এই! কিন্তু বলবে কি করে? একজন মহিলা কে এই কথা বলা যায়?
বলা যায় যে আপনার ব্লাউসের হাতের পিছনদিকের সেলাইটা অনেকখানি ফেসে গেছে !
তাও সম্পূর্ণ অপরিচিত এক পুরুষ হয়ে! কিভাবে react করবে ওই সাদা শাড়ী?
অপ্রস্তুত তো হবেই, লজ্জায় কি কুঁকড়ে যাবে? নীরবে কৃতজ্ঞতা জানাবে
শুভমকে? নাকি ভীষণ রেগে যাবে, সিন create করবে জনসমক্ষে! ভেবে পায়না
confused হয়ে যাওয়া শুভমl কিন্তু যদি কৃতজ্ঞ হয়? একটা প্রেম এর সুরুয়াত
ও তো হতে পারে! আবার যদি তা না হয়? এক ট্রেন ভর্তি লোক শুভমকে কৌতুকের
দৃষ্টি তে দেখবে! কিন্তু ও কি এটা বুঝবে না, কোনো বাজে উদ্দেশ্য ওর নেই,
জাস্ট ওকে ভিড়ের মাঝে অনেকগুলো কুদৃষ্টি থেকে এলার্ট করতে এইটুকু করছে
অপরিচিত এই যুবক l এতক্ষন ওর পিছনে শুধু শুভম, কিন্তু আর একটু এগোলেই যে
সবার দৃষ্টি পড়বে ওই দিকেl সাতপাঁচ ভেবে চলে সে, বেলগাছিয়া পেরোতেই
ট্রেনের ভীড় বাড়তে থাকে l
ধুর,
যা হয় হোক, "একটা কথা বলবো ম্যাডাম, প্লিজ খারাপ ভাববেন না আমায়, আঁচল
টা একটু গায়ে জড়িয়ে নিন কাইন্ডলি আর ট্রেন থেকে নেমে ওয়াশরুম এ গিয়ে
ড্রেসটা একবার চেক করে নেবেনl জানি অনধিকার চর্চা করছি, প্লিজ ক্ষমা করবেন l
"
উফফ রিলিভড, বলতে পেরেছে তাহলে! কিন্তু রিঅ্যাকশন হলোনা তো কোনও!
লাল পাড় সাদা শাড়ী কোথায়?! ওর এতো শত ভাবনার মাঝে কি নেমে গেলো? না কি এগিয়ে গেলো লেডিস সিটের দিকে! খেয়ালই করলোনা সে?!
"পরবর্তী স্টেশন পার্ক স্ট্রিট, প্লাটফর্ম বাঁ দিকে.... আগলা স্টেশন....."
গন্তব্যের ঘোষণায় সম্বিৎ ফেরে l
নামার জন্য দরজার দিকে ঘুরে দাঁড়ায় শুভমl
No comments:
Post a Comment